মরক্কোর
১২ বছর বয়সী শিশু ওয়ালিদ কাশাশ। ছোট্ট এই শিশুর সঙ্গে দারুণ মিল লিওনেল
মেসির! ছোটবেলায় বার্সার এই আর্জেন্টাইন জাদুকরের শরীরে গ্রোথ হরমোনের অভাব
দেখা দেয়, কিন্তু পরিবার অর্থের অভাবে তাঁর চিকিৎসা করাতে পারছিল না। ঠিক
একই অবস্থা কাশাশেরও।
দুজনের মধ্যে মিল রয়েছে আরও। মেসির মতো শিশু কাশাশও ফুটবল ভালোবাসে, বড়
ফুটবলার হতে চায়। কিন্তু বাধা হয়ে আছে গ্রোথ হরমোনের স্বল্পতা, যার কারণে
স্বাভাবিক শিশুর মতো শারীরিক বৃদ্ধি হচ্ছে না ওর।
কাশাশের দুঃখটা মেসির চেয়ে তাই অন্য কারও বেশি জানার কথা নয়। ছোট্ট মেসির
চিকিৎসা আটকে থাকেনি, দায়িত্ব নিয়েছিল বার্সেলোনা। কিন্তু কাশাশের কী হবে?
গোল ডটকমের খবরে বলা হয়েছে, আটকে থাকছে না কাশাশের চিকিৎসাও। মরক্কোর এক
নারী ফুটবলপ্রেমী শিশুটির অবস্থা অবহিত করেন ছোটবেলার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা
কাটিয়ে ফুটবল জাদুকরে পরিণত হওয়া লিওনেল মেসিকে। জানান, প্রতি ১৫ দিনে
কাশাশের চিকিৎসা বাবদ খরচ হচ্ছে ১৬৭ পাউন্ড। কিন্তু এত অর্থ খরচ করা ওর
পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। ওই নারীকে বিমুখ করেননি মেসি। আগামী ছয় বছর,
অর্থাত্ কাশাশের বয়স ১৮ বছর হওয়া পর্যন্ত ওর চিকিৎসার সব খরচ বহন করবেন
মেসি।
মেসির বয়স তখন ১১। এই কাঁচা বয়সেই যুবদলের হয়ে নিজের উত্থানের ইঙ্গিত দেন
মেসি। ছোট্ট ছেলেটির ফুটবল নৈপুণ্যে মুগ্ধ হয় সবাই। কিন্তু সমস্যা হলো,
মেসির শরীরে হরমোনের অভাব ধরা পড়ে। চিকিৎসা বাবদ প্রতি মাসে মেসির প্রয়োজন
ছিল ৯০০ ডলার। ওই সময়ে আর্জেন্টিনা ছিল চরম অর্থনৈতিক মন্দায়। দেশটির কোনো
ক্লাবই মেসির পেছনে এই অর্থ ব্যয় করতে রাজি ছিল না।
মেসির ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারত ওখানেই, কিন্তু হয়নি। ভাগ্যের
সহায় আর ‘জাদুকরী’ ফুটবল প্রতিভার জন্য ছেলেটি নজরে পড়ে যায় বার্সেলোনার।
আর এখান থেকেই ‘দ্বিতীয়’ জীবন শুরু হয় মেসির।
আর্জেন্টিনার চিকিত্সকেরা আশঙ্কা করেছিলেন, গ্রোথ হরমোনের অভাবের কারণে
মেসি বড় জোর ৪ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা হতে পারেন। কিন্তু মেসির উন্নত চিকিৎসা
নিশ্চিত করতে ক্লাবের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ খরচ করে বার্সা। যার ফল
আজকের মেসি—উচ্চতায় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। জীবনের শুরুতেই ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ
হওয়ার আশঙ্কায় পড়া ছেলেটি এখন বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন। কে জানে
মরক্কোর শিশু কাশাশও হয়তো একদিন মাতাতে পারেন ফুটবলবিশ্ব!
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন