মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১২

আউটসোর্সিংয়ে সেরা ৩০-এ বাংলাদেশ




প্রযুক্তিভিত্তিক বৈদেশিক শ্রমবাজার হিসেবে বিশ্বে সেরা ৩০টি দেশের অন্যতম বলে বিবেচিত হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণা এবং জরিপক্ষেত্রে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গার্টনার-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে বিশ্বে সেরা ৩০টি দেশের তালিকায় এই প্রথমবারের মতো স্থান পেলো বাংলাদেশ। খবর গার্টনার অনলাইন-এর।প্রযুক্তিভিত্তিক বৈদেশিক শ্রমবাজার হিসেবে বিশ্বে সেরা ৩০টি দেশের অন্যতম বলে বিবেচিত হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণা এবং জরিপক্ষেত্রে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গার্টনার-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে বিশ্বে সেরা ৩০টি দেশের তালিকায় এই প্রথমবারের মতো স্থান পেলো বাংলাদেশ। খবর গার্টনার অনলাইন-এর।

গার্টনার সম্প্রতি ২০১০-২০১১ সালে অফশোর সার্ভিস, আউটসোর্সিংসহ তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া সেরা ৩০টি দেশের তালিকা করেছে। সেখানে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৭ টি উন্নত দেশের নাম। উন্নত এই দেশগুলো এর আগে তালিকায় ওপরদিকেই ছিলো। এবার বাদ পড়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ইসরায়েল, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর এবং স্পেন। এই দেশগুলোকে সরিয়ে এবার স্থান করে নিয়েছে নতুন ৮ টি দেশ। আর এই ৮ টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নামটি হলো বাংলাদেশের।

প্রতিটি দেশকে রেটিং দিতে ১০ টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করেছিলো গার্টনার। কোনো একক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট দেশের কাজের ক্ষেত্র এবং অবকাঠামো বিষয়টি ছিলো গার্টনারের প্রধান বিবেচ্য। সেই মানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথেষ্টই এগিয়েছে। যে ১০ টি বিষয়ের ওপর রেটিং দেয়া হয়েছিলো সেগুলো হলো ভাষা, সরকারি সাহায্য, লেবার পুল বা শ্রমিক সংঘ, অবকাঠামো, শিক্ষা ব্যবস্থা, খরচ, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতকি পরিবেশ, সাংস্কৃতিক সহনশীলতা, আভ্যন্তরীন এবং আন্তর্র্জাতিক পরিপক্কতা, এবং ডেটা ও বুদ্ধিকৃত্তিক সম্পদের নিরাপত্তা এবং প্রাইভেসি। এই বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে ৫টি রেটিংয়ে ভাগ করা হয় দেশগুলোকে। এই রেটিংগুলো হলো ‘পুওর’ বা বাজে, ‘ফেয়ার’ বা মানানসই, ‘গুড’ বা ভাল, ‘ভেরি গুড’ বা যথেষ্ট ভাল এবং ‘এক্সেলেন্ট’ বা চমৎকার।




গার্টনারের রেটিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ‘পুওর’। গত এক দশকে দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে গেলেও অবকাঠামো খাতের তেমন বিস্তার না হবার ফলেই বাংলাদেশের রেটিং-এ পিছিয়ে আছে বলে গার্টনারের জরিপে দেখা গেছে। গার্টনার তাদের জরিপে এমন দেশ বেছে নিয়েছে যেগুলো মুলত কম আয়ের দেশ হওয়া সত্বেও মানুষের কাছে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে পেরেছে।

গার্টনার এর রিসার্চ ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়ান ম্যারিয়ট জানিয়েছেন, ‘এ বছর সেরা যে ৩০টি দেশ তালিকায় স্থান পেয়েছে সে দেশগুলো সত্যিকার অর্থেই তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রæতিশীল দেশ। উন্নত দেশগুলোতে পরিবর্তনের হার খুবই ধীর, তাই আমাদের লক্ষ্য ছিলো সে সব দেশ বা স্থানকে বেছে নেয়া যারা উন্নয়নশীল এবং ধীরে ধীরে আভ্যন্তরীন এবং আন্তর্জাতিক ভাবেও উন্নতি করতে পারছে’।

গার্টনারের সেরা ৩০ টি দেশের তালিকায় এশিয়া/প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে ৯ টি দেশ স্থান পেয়েছে। এক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় ছিলো গত এক দশকে তারা কেমন উন্নতি করেছে সে বিষয়গুলো। এশিয়া অঞ্চলে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভারত। আর উন্নয়নের দিক থেকে ভারতের নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী চীনের অবস্থান তার পরেই।

গার্টনারের তালিকায় অঞ্চলভিত্তিক দেশগুলো হলো :

আমেরিকা : আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, মেক্সিকো, পানামা এবং পেরু।

এশিয়া প্যাসিফিক : বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, এবং ভিয়েতনাম।

ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা : বুলগেরিয়া, চেক রিপাবলিক, মিশর, হাংগেরি, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, পোল্যান্ড, রুমানিয়া, রাশিয়া, স্লোভাকিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক এবং ইউক্রেইন।

গার্টনার জানিয়েছে, অফশোর সার্ভিস বা আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে জরিপে দেখা গেছে, অনেক দেশই তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে আসছে এবং ভাল করছে। প্রতিশ্রুতিশীল অনেক দেশই তথ্যপ্রযুক্তিতে জোর দেবার ফলে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি হবার চেষ্টা করছে। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোর দেবার ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বেড়ে যাচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে।

সেরা ৩০ এর তালিকায় একেবারেই নতুন করে স্থান পেয়েছে নতুন ৫টি দেশ। আর সেখানে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ। এই পাঁচটি দেশ হলো বাংলাদেশ, বুলগেরিয়া, কলাম্বিয়া, মারিশাস এবং পেরু। এ ছাড়াও আরো তিনটি দেশ এই তালিকায় ঢোকার অপেক্ষায়। তারা হলো পানামা, শ্রীলঙ্কা এবং তুরস্ক।

দক্ষতার মিশেল, বর্তমান নীতিনির্ধারণ এবং সম্ভাবনার বিষয়টি ছাড়াও লেবার পুলের সুযোগে প্রথম অবস্থানটি ভারতের। এছাড়াও এ তালিকায় ভিয়েতনাম, চীন, মালেশিয়া এবং ফিলিপাইন যোগ হয়েছে। এই দেশগুলো রেটিং পয়েন্ট ‘গুড’ বা ভালো। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার রেটিং পয়েন্ট ‘পুওর’ থেকে ‘ফেয়ার’ অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। চীন এবং মালেশিয়ার অবস্থান আরো ভালোর দিকে সেখানে বাংলাদেশ কেবল ‘পুওর’ রেটিং নিয়ে তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। এর কারণ হলো বাংলাদেশের অবকাঠামো বিষয়ক বিভিন্ন অসুবিধা। শিক্ষা ব্যবস্থায় রেটিংয়ের দিক থেকেও এগিয়ে চীন, ভারত মালেশিয়া এবং ভারত।


0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন